শাহেদ মিজান, সিবিএন:
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর এবং কক্সবাজার পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলীর কান্ডজ্ঞানহীনতায় যানজটে অচল হয়ে পড়েছে কক্সবাজার শহর। এই তিন প্রকৌশলীর দায়িত্বহীনতার কারণে শহরের প্রধান সড়কের খুরুশকুল রাস্তার মাথায় এলাকায় মারাত্মক খানা-খন্দক সৃষ্টি হয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে যানজটের এই অচলাবস্থা বিরাজ করছে। এই কারণে শহরবাসী ও যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। তবে তিন প্রকৌশলী একে অপরের উপর দোষ চাপিয়ে দিয়ে কেউ এই সমস্যা উত্তরণে ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

জানা গেছে, খুরুশকুল রাস্তারমাথা চৌধুরী ভবনের সামনের প্রধান সড়ক খুড়ে কক্সবাজার পৌরসভার পানি সরবরাহের লাইন টানে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। কাজ করে পরে সড়ক সঠিকভাবে মেরামত করে দেয়ার নিয়ম থাকলেও তা করেনি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ফলে ওই এলাকায় ৫০ ফুট ব্যবধানের দু’স্থানে গভীর গর্ত হয়ে রয়েছে সড়ক। অতিবর্ষণের ফলে গর্তগুলো আরো দেবে যায়। এতে যানবাহন চলাচলে মারাত্মকভাবে বিঘœ ঘটে। এর ফলে ব্যস্ততম ওই স্থানে যানবাহন আটকা পড়ার কারণে শহরের কালুদোকান থেকে আলিরজাঁহাল পর্যন্ত এবং খুরুশকুল ব্রীজ পর্যন্ত মারাত্মক যানজট লেগেই আছে। এভাবে সারাদিন লেগে থাকছে যানজট। ফলে যানজটে আটকা পড়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে লোকজনকে।

সরেজমিনের দেখা গেছে, পাশপাশি ওই স্থানে তিনফুট তিনফুটকে করে সড়ক খোড়া হয়েছে। খোড়া স্থান মেরামত করা হয়নি। ফলে সৃষ্টি হয়েছে গভীর গর্ত। গর্তগুলো খুব আড়াআড়ি হওয়ায় গাড়ির চাকা পড়লেই আটকে যাচ্ছে। এই আটকা থেকে উঠাতে ঠেলতে হচ্ছে গাড়ি। অন্যদিকে সড়কের দক্ষিণ পাশে খন্দকের একটি অংশে রয়েছে গভীর গর্ত। ওই গর্ত গভীর হওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে সেখানে লাল পতাকা টাঙিয়ে দিয়েছে স্থানীয়রা। এতে যানবাহন পারাপারে চরমভাবে সময় ব্যয় হচ্ছে। ফলে প্রধান সড়কের দু’দিক এবং খুরুশকুল থেকে আসা যানবাহন আটকা পড়ে থাকছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এতে যানবাহনের সারি দীর্ঘ হয়ে কালুর দোকান থেকে আলিরজাঁহাল পর্যন্ত এবং খুরুশকুল পর্যন্ত ত্রিমুখী তীব্র যানজট লেগে আছে।

স্থানীয় সচেতন মহল জানান, শহরের গুরুত্বপূর্ণ প্রধান সড়ক নিয়ে তিনটি অধিদপ্তরের দায়িত্বহীনতার কারণে শহরজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে লোকজনের ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু কেউ সমস্যা সমাধানে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। দায়িত্বশীল ওই ব্যক্তিরা যদি এই ধরণের আচরণ করেন তাহলে জনগণ কার কাছে যাবে?

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলী নূরুল আলম বলেন, ‘কাজটি পৌরসভার হলেও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এটি বাস্তবায়ন করেছে। এই কাজের ব্যাপারে তারা পৌরসভাকে অবহিত করেনি। যার ফলে এই দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।’

কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী রানাপ্রিয় বড়ুয়া বলেন, ‘পৌরসভার পানি সরবরাহ লাইন করার সময় সড়ক বিভাগের কোনো অনুমতি নেয়নি। নিময় না মেনেই এই কাজটি করায় সড়কের এই অবস্থা হয়েছে। যেহেতু কাজটি পৌরসভা করেছে তাই এর দায়-দায়িত্ব সড়ক বিভাগ নেবে না।’

কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ঋত্বিক চৌধুরী বলেন, পৌরসভার পানি সরবরাহের কাজটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করা হয়েছে। তবে কোন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান করেছে তা আমি এখনো জানিনা। সড়কের নষ্ট হওয়া অংশ মেরামতের জন্য ওই ঠিকাদারকে খোঁজা হচ্ছে।’